Wednesday, November 27, 2013

ই মেল

নিন্দুকে বলে সস্তা ডিজিটাল ক্যামেরা আর ফেসবুক আসার পর নাকি সবাই নিজেকে প্রফেসনাল ক্যামেরাম্যান ভাবতে শুরু করেছে। তা এই ব্লগ আসার পর সবাই নিজেকে লেখক ভাবতে সুরু করেছে কিনা নিন্দুকে সেরকম কিছু বলে নি। তবে হ্যাঁ, লিখতে বসলে নিজেকে লেখকই মনে হয়। আর বাঙ্গালিরা তো কোন এক "ঠাকুরের" আশীর্বাদে জন্ম লেখক। নোবেলটা যদিও এখনো ফিরে পাওয়া যায় নি। কিন্তু তাতে কি? তা ছাড়া সেই ছোটবেলায় যবে থেকে স্কুল ম্যাগাজিনে লেখা চেয়েছিল তখন থেকেই যা খুশি লিখে লোকজনকে জোর করে শুনিয়ে অত্যাচার করার একটা ভাল অভ্যাস গঠন হয়েছে।
   তবে হ্যাঁ, সত্যি কথাই বলা ভাল। কোন লেখক হতে বা ভাল লেখার জন্য "ব্লগ" লিখতে বসি নি। আসল ঘটনাটা হল অনেক দিন থেকেই "ব্লগ" কথাটা শুনে একটু কৌতূহল হচ্ছিল যে "ব্লগ" কি জিনিস। খায় না মাথায় মাখে।

   কিছু দিন আগে শুনেছিলাম অমিতাভ বচ্চন নাকি "ব্লগ" করে। ভেবেছিলাম হয়তো কোন নূতন সিনেমা হবে হয়তো। পরে একদিন একটা প্রবন্ধ পড়লাম "ব্লগ কি সংবাদিকতার ভবিষ্যতকে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফেলবে?" তখন থেকে ধীরে ধীরে একটা অনুভূতি হল যে "ব্লগ" আর যাই হোক কোন সিনেমার নাম নয়। এটা একটা যায়গা যেখানে নিজের কথা বলা যায়। তারপর ধীরে ধীরে পরিচয় হল "অর্কুট","ফেসবুক","টুইটার" আরও কত কিছুর সাথে। সত্যি কথা বলতে কি ভাল লাগল। কত সহজে পৌঁছে যাওয়া যায় সবার কাছে।
   ধীরে ধীরে আরও কত এল। বিভিন্ন ডিভাইস এর জন্য একদম স্পেসিফিক আপ্লিকেশন। কত সন্দেস প্রেরক (মেসেঞ্জার)। "জি-টক", "ফেসবুক ম্যানেজার" "ইয়াহু মেসেঞ্জার" (আমি এগুলোই ব্যবহার করি, মানে এগুলোতে আমার একাউন্ট আছে, তাই এগুলোই জানি)।  এ তো গেল কম্পিউটার এর জন্য। মোবাইল এর আবার "কাকাও টক", "কাকাও স্টোরি", "হোয়াটস অ্যাপ", "ভাইবার"। বাপরে। শেষই হয় না। মেসেঞ্জার এর লাইন পড়ে গেছে।
   এক সময় ছিল যখন মহান মেসেঞ্জাররা আসতেন। যেমন এসেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ, যীশু, বুদ্ধ, মোহম্মদ, বিবেকানন্দ। এরা আসতেন আর মহান কিছু মেসেজ দিতেন। যাতে মানবজাতি অন্ধকারে রাস্তা খুঁজে পেত। আর এখন অনেক মেসেঞ্জার আছে কোন মহান মেসেজ নেই।
  ছাড় এসব গম্ভীর কথা। কি বলতে কি শুরু করেছি। আসলে কি বলছি আমি? এতক্ষনে বুঝতে পারছি আসলে আমি কিছু বলছি না। আমার কোন মেসেজই নেই। হাঃ হাঃ। 
  মনে পড়েছে। আমি আসলে বলছিলাম "ব্লগ" নিয়ে। এটা আমার প্রথম ব্লগিং। সে হিসাবে বেশ উত্তেজিত লাগছে। কেমন যেন নিজেকেও অমিতাভ বচ্চন লাগছে (ব্লগ শব্দটা আমি অমিতাভ বচ্চন এর সাথেই প্রথম শুনেছিলাম তাই)।
  আজ যখন শেষ মেষ ভেবেই বসলাম যে একটা কিছু লিখব তখন লেখার কোন টপিকই মাথায় আসছিল না।  আসলে আমার এই ব্লগ পর্যন্ত পৌঁছানোর ঘটনাটাও কিন্তু কম রোমহর্ষক নয়। আজকে সেটাই বলি। না ব্লগ অনেক লম্বা। আমার প্রথম ই মেল এর কাহিনি।

সে অনেক দিন আগের কথা। ২০০১। আমি হাইস্কুলে পড়ি। মেসে থাকি, পশ্চিমবঙ্গের এক মফস্বল শহর বর্ধমানএ। কম্পিউটার ও নেই আর মোবাইল ফোন ও নেই। নেই মানে চলন নেই। যতদূর মনে পড়ে ভারতবর্ষে সেটাই ননডিজিটাল যুগের শেষ আর আমজনতার জন্য ডিজিটাল যুগের শুরু। "এস এম এস", "চ্যাট্‌ "মেল" শব্দগুলোর সাথে তখনো ঠিক পরিচয় হয় নি। সম্ভবত তখন ও মোবাইলে ইনকামিং চার্জ লাগত। যাই হোক, বড় শহরে তখন সব্জির দোকান, সাইকেলের দোকান, মশলাপাতির দোকান এর সাথে সাথে আর একটা দোকান এরও বেশ প্রচলন হচ্ছে। " সাইবার ক্যাফে"।
 শুরুর দিকে ব্যাপারটা ঠিক বোধগম্ম হত না। সত্যি কথা বলতে কি একটু ভয়ই লাগত। সাধারানত ক্যাফে গুলো একটু বেশ সাজানো গোছানো হত। কালো কাঁচের দরজা হত। আর ভেতরে এসি লাগান থাকত। কেতাদুরস্ত কেও কেও ভেতর থেকে বের হলে দরজাটা একটু যেটুকু খুলত তার ফাঁক দিয়ে দেখতাম ভেতরে ছোট ছোট প্লাইউড এর খুপরির মধ্যে সারি সারি কম্পিউটার। গ্রামের থেকে এসেছি। অন্তর থেকে একটা অনুভূতি হত যে পুরো ব্যাপারটাই ঠিক আমার জন্য নয়। 
  এভাবেই কেটে যাচ্ছিল বেশ। সাইবার আর ডিজিটাল দুনিয়া থেকে দূর আমার সেই শান্ত পৃথিবীর নিস্তরঙ্গ ঝিলে ঢিল মারল আমার এক দাদা। সুশীলদা।
 ছোট বেলা থেকেই সুশীলদা আমার খুব প্রিয়। আমাকে যেমন ভালবাসে তেমনি পড়াশুনাতেও বেশ ভাল। সেই সুশীলদাই আমাদের গ্রাম এর প্রথম ছেলে যে গ্রাম এর বাইরে অনেক দূর গিয়েছিল। মানে বিদেশ পাড়ি দিয়েছিল। থাকতো ঘানায়। সেই আফ্রিকা। সদ্য চাঁদের পাহাড় পড়েছি। আফ্রিকা সম্পর্কে একটা শিহরণ আছে মনে। সুশীলদাকে আমার গল্পের "শঙ্কর" বলে মনে হত। একবার, তখন ক্লাস সিক্স এ পড়ি। হঠাৎ সুশীলদা আমাকে চিঠি লিখল ঘানা থেকে। আমার সারারাত ঘুম হয় নি। স্কুল আর হোস্টেল এর সব বন্ধুকে দেখিয়েছিলাম। অনেকে বিশ্বাস এ করতে চায় নি। কি যে আনন্দ হয়েছিল কি বলব। 
  সেই সুশীলদাই একবার বাড়ি এল। যাবার আগে দিয়ে গেল তার কার্ড। ভিসিটিং কার্ড। তাতে নাম ঠিকানা পদমর্যাদা, ফোন নম্বর এর সাথে সাথে আর একটা লাইন ছিল যেটা হয়ত আমার নজর এড়িয়ে যেত যদি না আগে অর্ঘ তাঁর আমেরিকার মামাকে কিভাবে এক সেকেন্ডে কম্পিউটার এর মাধ্যমে চিঠি পাঠায় সে গল্প ফলাও করে না বলত (প্রসঙ্গত,সে অর্ঘও এখন আমেরিকায় থাকে)। সেটা আজকের দুনিয়ায় সবার জানা। একটা ইমেল আইডি। হঠাৎ মগজে খেলে গেল আরে আমিও তো সুদুর ঘানায় চিঠি পাঠাতে পারি এক সেকেন্ডে। ব্যাস যেমন ভাবনা তেমন কাজ।
  সাইকেলটা নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। একটা সাইবার ক্যাফেতে। কারন ক্যাফের দরজায় দেখতাম লেখা আছে "ই মেল"। ভেবেছিলাম এটাও চিঠি পাঠাবার মত কোন ব্যাপার। বা বড় জোর ফোন করার মত। পকেটে টাকা বেশি নেই। তাই ঢুকেই জিজ্ঞাসা করলাম ইমেল পাঠাতে কত টাকা লাগে? উত্তরটা শুনে ঠিক বোধগম্য হয় নি প্রথমে। "এক ঘন্টায় তিরিশ টাকা।" ভাবলাম এ তো বেশ সস্তা। কারন আমার তো এক সেকেন্ডই লাগবে। কোন মতেই হিসাব করতে পারছিলাম না এক ঘন্টায় তিরিশ টাকা লাগলে এক সেকেন্ডে কত টাকা লাগতে পারে?
  যাই হোক অনেক সাহস নিয়ে বললাম আমি একটা ইমেল করব। সে বলল কর। আমি তো অবাক। আমি তো কিছুই জানি না। আমি করব কি ভাবে? লেখা লিখির জন্য তো একটা কাগজ বা খাম বা কিছু একটা দেবে না কি? আমি লাজ লজ্জার মাথা খেয়ে বললাম "দেখুন আমি ঠিক জানি না। আমাকে একটু সাহায্য করুন।" তারপর দাদার ভিসিটিং কার্ডটা দেখালাম যেখানে মেল আইডিটা লেখা আছে।  সে কম্পিউটারটা দেখিয়ে বলল ওখানে বোস, আসছি।

   কিছুক্ষন পর এসে কি সব ক্লিক করল এখানে ওখানে, তারপর জিজ্ঞাসা করল তোমার মেল আইডি কি? আমার তো হাসার জোগাড়। আমার আবার মেল আইডি কি? সেসব তো বড় বড় লোকের থাকে। আসলে আমি মেল আইডি কথাটার মানেই ঠিক বুঝি নি তখন।
  আমার সরল জবাব "আমার তো কোন আইডি নেই। আইডি করতে গেলে কি করতে হবে?" সে বলল " একটা অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে, তার জন্য একটা ফর্ম ফিল আপ করতে হবে"। এর আগে আমি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ছাড়া আর কোন অ্যাকাউন্ট এর কথা শুনিনি ।  আমি তখন মরিয়া। যা করার করব। কিন্তু মেল আমাকে পাঠাতেই হবে।
   আমি জিজ্ঞাসা করলাম ফর্ম ফিল আপ করতে কত টাকা লাগবে? সে বলল "ফ্রি"। বললাম দিন ফর্ম। লোকটার সেই তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিটা আমার এখনও মনে আছে।
   আমি একটু কুঁকড়ে গেলাম। বুঝলাম ভুল যায়গায় চলে এসেছি। যাই হোক, সে একটা ফর্ম কম্পিউটার এর পর্দায় বের করে দিয়ে বলল এটা ফিল আপ কর আমি আসছি। বলে চলে গেল। আসলে তার জেরক্স এর দোকানও ছিল। আর সেখানেই তাকে বেশি সময় দিতে হত। আমি তো কিংকর্তব্যবিমুঢ হয়ে রইলাম।
    আমার পাশের কম্পিউটার এ একজন বসেছিলেন। আমার অবস্থা দেখে একটু দয়া হল মনে হয়। সে আমাকে এক এক করে দেখিয়ে দিল কি করে কি-বোর্ডে টাইপ করে লিখতে হয়।
    জানার আনন্দে বিভোর হয়ে আমি ফর্ম পূরণ করে চলেছি। প্রায় শেষ হব হব হয়েছে, এমন সময় একটা কোলাহল কানে এল। একজন ক্যাফের লোকটাকে বলছে "আরে দাদা মেল তো সেন্ডই হচ্ছে না। আপনার ইন্টারনেটই খারাপ। কোন কানেকসানই নেই। আমি টাকা দেব না।"  
      আমি তো অবাক। এ কি বলে? যাই হোক আমি নিজের চরখায় তেল দিলাম। কিন্তু সাথে সাথে ক্যাফের লোকটা আমাকে বলল "আজ হবে না, ইন্টারনেট কানেকসানএ গোলমাল আছে।" যা ব্বাবা। মানে আমার মেল পাঠান হবে না? বেশ হতাশ হলাম। কিন্তু ততক্ষনে আমি বুঝে গেছি (আমি খুব বুদ্ধিমান) যে এক ঘন্টায় তিরিশ টাকা মানেটা কি !! যাই হোক মন খারাপ করে বেরিয়ে এলাম। তবে হ্যাঁ লোকটা ১০টাকাই নিল, ইন্টারনেট ছিল না এতক্ষন !! 
  বাইরে বের হয়ে আমি ফিরে এলাম আমার দুনিয়ায়। তবে হ্যাঁ এতো সহজে আমি হাল ছাড়তে রাজি নই। 
দিন দুই বাদ আবার গেলাম। তবে এবার অন্য ক্যাফেতে। একটু ফাঁকা ফাঁকা। গিয়েই সরাসরি বললাম "দেখুন দাদা, আমাকে একটা মেল করতে হবে, কিন্তু আমি মেল করতে জানি না আর আমার মেল আইডিও নেই, আপনাকে সাহায্য করতে হবে"।
 এক নিঃশ্বাসএ বলে ফেললাম। ছেলেটা বেশ ভাল ছিল। বলল কোন ব্যাপার নয়। এসো। সেই সব করে দিল। শুধু লিখলাম আমি।
   সে এক অন্য অনুভূতি। আমার মন তখন ঘানায়। আসলে ঘানায় নয়। আফ্রিকায়। চাঁদের পাহাড়ে। সেই শঙ্কর, সেই আলভারেজ, সেই বাওয়াব গাছ, সেই সিংহ, সেই তিন আঙ্গুল ওয়ালা বুনিপ। কি কি যে লিখেছিলাম মনে নেই। কিন্তু খুব আদর ছিল সেই চিঠিতে। চিঠি তো নয়। আমার আবেগ, আমার সমস্ত কল্পনা, সমস্ত উত্তেজনা একাকার ছিল সেই "মেল" এ। হুঁশ ফিরল যখন সেই ছেলেটা বলল একটু তাড়াতাড়ি কর, এক ঘণ্টা হতে চলল। আমি আফ্রিকা ছেড়ে বর্ধমান এ ফিরে এলাম। "সেন্ড"-কি টা টেপার সাথে সাথে মেল গেল সাত সমুদ্র তের নদীর পার এ।
    টাকা মিটিয়ে যখন বাইরে এলাম তখনো আমি স্বপ্নের মধ্যে। যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না। প্রথম মেল করার উত্তেজনা তখন আমার শিরায় শিরায়। হৃৎপিণ্ড যেন রক্তকে অনেক জোরে জোরে পাম্প করছে। সাইকেল নিয়ে ঘুরলাম অনেকক্ষণ। আজ শহরের আলোগুলো কেন জানি না চোখে পড়ছে না। কোলাহল কানে আসছে না। আর কোন রাস্তা দিয়ে যে যাচ্ছি সেটা তো কোন খেয়ালই নেই। কোথায় বর্ধমান আর কোথায় আফ্রিকা !! আমি বর্ধমান নয় আফ্রিকার জঙ্গল এ ঘুরছি। না জানি দাদা কখন আমার মেল পড়বে। পড়ে কখন উত্তর দেবে। 
    পরের দিন আমি গেলাম আবার সেই ক্যাফেতে। জিজ্ঞেস করতে উত্তর এসেছে কি না। সেই ছেলেটা আবার মেল খুলল। খুলে বলল আমার মেলটা নাকি যায় নি। মেল আইডিটা নাকি ভুল। বা তার কোন অস্থিত্ত নেই। খুবই দুঃখ হয়েছিল সেদিন।  কি আর করব? নিজেকে সান্তনা দিলাম চেষ্টা তো করেছিলাম।
  তারপর অনেকদিন কেটে গেছে। প্রায় ২ বছর। আমি কলেজে পড়ি। বর্ধমান ছেড়ে এসেছি বাঁকুড়া। এর মধ্যে দাদা আমাদের বাড়িতে ফোন করেছে বেশ কয়েকবার। আর আমি ইতিমধ্যেই জানিয়েছি যে আমি মেল পাঠিয়েছিলাম কিন্তু পৌঁছায়নি। দাদা অন্য একটা মেল আইডি দিল আমায়।
  আর একটা ঘটনা ঘটেছে। আমি কম্পিউটার ক্লাসে ভর্তি হয়েছিলাম। আর ততদিন এ কম্পিউটার এর প্রাথমিক বিষয়গুলো জানা হয়ে গেছে। এবার একটু সাহস নিয়ে গেলাম একটা ক্যাফেতে। কিন্তু দু তিন বার ঘুরে আসতে হল। পারলাম না মেল পাঠাতে। প্রায় হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু মন বলল আর একবার চেষ্টা করি। প্রতিবারই কিছু না কিছু একটা গোলমাল হয়। হয় আইডি ঠিকঠাক তৈরি হয় না, নয় তো আইডি তৈরি করার পরই তার পাসওয়ার্ড ভুলে যাই। সে এক গোলমাল সময়।
   শেষ পর্যন্ত একদিন সফল ভাবে পাঠালাম একটা মেল। আর উত্তর ও পেলাম কদিনের মধ্যে। আজও সে অনুভুতি আমার হৃদয়ে "সেভ" করা আছে।
  আমার মনে হয় গিনিস বুকএ একটা রেকর্ড  করে ফেলেছি। একটা মেল পাঠাতে দীর্ঘতম সময়। তিন বছর। আর কত টাকা যে গেছে তার কোন ইয়ত্তা নেই সাথে কত অপমান। কে যে বলেছিল মেল পাঠাতে নাকি এক সেকেন্ড সময় লাগে !!!

*** পুনশ্চ : কলেজ শেষে একটা চাকরির পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলাম। সেখানে একটা কলাম ছিল "মেল আইডি" আর আমি সেটা গর্ব ভরে লিখেছিলাম। অবশেষে কাজে লাগল আমার মেল আইডি। অনেক বন্ধুর মেল আইডি ছিল না। তারা আমাকে দেখে অবাক। আমার কি করে মেল আইডি আছে। অল্প সময়ে সে গল্প বলে উঠতে পারি নি ওদের। কিন্তু ওদের সেই আশ্চর্য ভরা চাহনি আমার সমস্ত কষ্ট সুদে আসলে ফিরিয়ে দিয়েছিল পরিতৃপ্তি রূপে।