Autumn কে কি বসন্ত বলা যায়? আমাদের পশ্চিমবঙ্গে বা ভারতবর্ষে হেমন্তকালের যা রূপ আর ইংরেজিতে Autumn এর রূপ এক নয়। তাই উত্তর গোলার্ধে হেমন্ত আর Autumn একসাথে আসলেও হয়তো দেশভেদে পরিবেশকে বর্ণনা করার জন্য হেমন্ত Autumn আর Fall এই তিনটে আলাদা শব্দ ব্যবহার করলে ভাল হয়। যেমন কোরিয়াতে "সকাল বেলায় ঘাসের আগায় শিশিরের রেখা" দেখা যায় না। তাই এখানে Autumn কে হেমন্ত বলতে ইচ্ছা করে না।
এখানে ঠান্ডাটা একটু ঝুপ করে পড়ে যায়। গরম থেকে হটাৎ ঠান্ডা। সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিকে এসি বন্ধ করে হঠাৎ লেপ ঢাকা দিতে হয়। তবে সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর বিষয় হল পাতাঝরা। হঠাৎ যেন প্রকৃতির মাঝে রং এর আগুন লেগে যায়। চারিদিকে সবুজ বদলে দিয়ে কেও যেন লাল হলুদ বাদামী রঙের তুলিতে লেপে দিয়ে যায়। যেদিকেই তাকাই না কেন মন উদাস হয়ে ওঠে। একটা পাগল করা আচ্ছন্নতা সারাক্ষণ ঘিরে থাকে।
তবে সুখ যেন ক্ষণস্থায়ী। দীর্ঘ শীতঘুমে যাবার আগে একবার প্রকৃতির আবির খেলা। রংএ রংএ রাঙ্গিয়ে দেওয়া। আমি Autumn এর প্রতিটা দিন এই রঙের বর্ষায় স্নান করি। প্রকৃতিকে আত্তীকরণ করি। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, একই জায়গা প্রতিদিন দেখতেও কোনো ক্লান্তি আসে না। প্রতিদিন একই জায়গায় আলাদা আলাদা রূপ। আর মনের মধ্যে একটা দুরুদুরু ভাব। এই বুঝি নিভে গেল বাতি। রং এর ছটা ধীরে ধীরে বাড়ে। একসময় সবচেয়ে উজ্জ্বল হয়ে যেন সুপারনোভা বিস্ফোরণ ঘটায়। সে রূপের মায়াজালে না জড়ায় কার সাধ্য? আহা কি রূপ। সে রূপের বর্ণনা করি তার কি সাধ্য আমার।
এরপরেই আসে সেই মন খারাপ করা সময়। ঝরতে শুরু করে পাতাগুলো। সেই লাল হলুদ বাদামী পাতায় ভরে যায় গাছের তলা। আর খালি হয় শাখা। এরপর দীর্ঘ চার পাঁচ মাস বিশ্রাম। এই পাতাঝরা কে ত্বরান্বিত করে মাঝে মাঝে এক পশলা বৃষ্টি। বৃষ্টি যে শুধুমাত্র পর্ণমোচনকে ত্বরান্বিত করে তাই নয়, বৃষ্টি বয়ে আনে ঠান্ডা। এভাবে একদিন হালকা সোয়েটার থেকে গায়ে চাপে মোটা কোট। ঠান্ডা বেড়ে চলে। গাছের সমস্ত পাতা নিঃশেষিত হয়ে যায় বাদামী কাল কান্ড আর শাখা দের রেখে। নূতন প্রাণের আশা নিয়ে।
No comments:
Post a Comment